মূল ভাবনা – অমৃতা ঘোষ এবং রাজদীপ দাস,
কলমে – রাজদীপ দাস,
আলোকচিত্র – অমৃতা ঘোষ,
সৃজনশীল পরামর্শ -শৌণক দত্ত,
চরিত্রায়ণ – প্রীতিশা, রূপক, বর্ষা, সৌরভ, রাজদীপ.
রংপুরের মেয়ে মঞ্জিরা, অষ্টাদশী, সবে কলেজে উঠেছে। স্মার্ট, সুন্দরী, আধুনিকা মঞ্জিরা আর পাঁচটা মেয়ের মতোই প্রাণবন্ত, উচ্ছল।আর পাঁচটা মেয়ের মতোই একদিন, প্রেমের রঙে রঙিন হল, মঞ্জিরার জীবন।
বাঁধন পড়ল মঞ্জিরার জীবনে। তবে সে বাঁধনে অনেকটা ভালোবাসা মাখানো। তাই, হাতে হাত রেখে, সিঁথি রাঙিয়ে, একাকীত্বের চৌকাঠ পেরিয়ে গেল রংপুরের মেয়ে।
নতুন স্বপ্নের আশায় নতুন দিগন্তে পাড়ি দিল তারা, দুজনে।
কিন্তু, রং আর বেশি দিন থাকলো না তার জীবনে। একদিন বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মঞ্জিরার স্বামী।
হঠাৎ করে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেল মেয়েটার। যে মেয়েটার কাছে রং এত প্রিয় ছিল, নিয়তি যেন এক পলকেই সব রং কেড়ে নিল তার থেকে।
সবার অলক্ষ্যে, আনমনে, সে সদ্য ফেলে আসা স্মৃতিগুলো হাতরায়। অশ্রুজলে হাতে নেয় সেই সিঁদুর-কৌটো যার রং আর লাগবেনা তার সিঁথিতে, সেই মানুষটাই তো আর নেই… আর ভাবতে পারেনা মঞ্জিরা।
এখন সে একাকিনী। তার আগের প্রাণোচ্ছল স্বভাব আর নেই। দিগন্ত বিস্তৃত মরু প্রান্তরে, চঞ্চল নদীও দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আজ মঞ্জিরার সেই অবস্থা।
দিন যায়। ফাল্গুনের এক উৎসবের আবহে, তার চোখে পরে একদল যুবক-যুবতী রং খেলছে। পুরনো দিনে গুলো মনে পড়ে যায় তার।
বাগানের একটা দিকে তাকিয়ে হঠাৎ স্থির হয়ে যায় মঞ্জিরা। বসন্তের এই সময়ে, পলাশ, শিমূল, অশোক ফুলে রাঙা হয়ে আছে প্রকৃতি।
একাকীত্বের সাদা-কালো ঘেরাটোপে, সে যেন হারিয়ে ফেলেছিল নিজেকে। প্রকৃতির কাছে এসে, আবার রং খুঁজে পায়, মঞ্জিরা। অনেকদিন পর ঠোঁটের কোণে তার ম্লান হাসি।